নাগাল্যান্ড ইন্ডিয়া

  • প্রিয় সুহৃদ আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হলাম জুকৌ ভ্যালী বা  জুকৌ উপত্যকা,  নাগাল্যান্ড  ভ্রমণের খুঁটি নাটি তথ্য নিয়ে। ভালো লাগলে শেয়ার ও কমেন্ট করে সবাই কে জানার সুযোগ করে দেবেন। তো শুরু করা যাক।

    নাগাল্যান্ড পৌঁছানোর উপায় এবং বিদেশীদের জন্য FRO :-

     
    ওয়ার সিমেট্রি কোহিমা নাগাল্যান্ড
    ওয়ার সিমেট্রি, কোহিমা
    নাগাল্যান্ড আপনি শিলং থেকেও যেতে পারেন আবার গুয়াহাটি থেকেও যেতে পারেন।প্রথমে ডাউকি বর্ডার পার হয়ে ডাউকি থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভ করে অথবা শেয়ার করে শিলং যেতে হবে।শিলং পর্যন্ত ট্যাক্সি রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে ১৫০০-১৮০০ রুপি।আর শেয়ারে গেলে জনপ্রতি ১৫০ রুপি।শিলং থেকে নাগাল্যান্ড যাওয়া যায় দুইভাবে।সরাসরি বাস সার্ভিস আছে শিলং থেকে নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা পর্যন্ত।ভাড়া জনপ্রতি ৭০০ রুপি।আবার ৭ সিটের ইনোভা গাড়ীতেও যেতে পারেন।জনপ্রতি ১২০০ রুপি।


    এছাড়াও গুয়াহাটি থেকেও নাগাল্যান্ড যাওয়া যায়।সেক্ষেত্রে আপনাকে শিলং থেকে ট্যাক্সি করে যেতে হবে গুয়াহাটি।ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ রুপি।গুয়াহাটি থেকে নাগাল্যান্ড এক্সপ্রেস ট্রেনে যেতে পারেন ডিমাপুর।নাগাল্যান্ড এক্সপ্রেস প্রতিদিন রাত ১১.৩৫ মিনিটে ছাড়ে।ভাড়া ১৫০-৮৫০ পর্যন্ত।ভোর ৫টায় ট্রেন আপনাকে ডিমাপুর নামিয়ে দেবে।ডিমাপুর থেকে ট্যাক্সি করে কোহিমা।ভাড়া জনপ্রতি ৪০০-৫০০ রুপি।৪ ঘন্টার মত লাগবে কোহিমা পৌঁছাতে।রাস্তা খুবই বাজে।

    বিদেশীদের জন্য নাগাল্যান্ডে ঢোকার নিয়ম হচ্ছে নাগাল্যান্ডে পৌঁছানোর পর লোকাল থানা থেকে FRO এন্ট্রি করে নেওয়া আর ইন্ডিয়ানদের ক্ষেত্রে ILP (Inner Line Permit) নেওয়া।বিদেশীরা যদি লোকাল থানা থেকে FRO না নেয় তাহলে চেক পোস্টে আটকে দেয়।নাগাল্যান্ড ঢুকতে হলে অবশ্যই আপনাকে লোকাল থানা থেকে পারমিশন নিয়ে ঢুকতে হবে।খুবই সোজা ব্যাপার।যে কোন লোকাল থানায় গিয়ে পাসপোর্ট দিলেই ওরা এন্ট্রি করে নেবে।

    নাগাল্যান্ডের ইতিহাস :-

    হিমালয়ের পাদদেশের অভ্যন্তরে প্রতিপালিত নাগাল্যান্ড ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সবচেয়ে সুন্দর রাজ্য।

    উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রেক্ষাপটে নাগারাই প্রথম বিদ্রোহ করে। তারা ভারতীয় রাষ্ট্রে অঙ্গীভূত হতে অস্বীকার করে এবং ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এরই আগে ১৯৪৭ সালের জুন মাসে নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিল (এনএনসি) গঠিত হয়। এ সংগঠনটি নাগা জনগোষ্ঠীর একমাত্র প্রতিনিধি রুপেনাগা হিলে একটি গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য ভারতের প্রতি দাবি জানায়। নিজেদের রাজনৈতিক ভাগ্য গণতান্ত্রিকভাবে বেছে নেয়ার লক্ষ্যে নাগাদের মতোই কাশ্মীরিরাও কাশ্মীর-উপত্যকায় গণভোটের দাবি জানিয়েছিল। জনগণের পক্ষ থেকে উত্থাপিত উভয় দাবিই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অগ্রাহ্য করে। নাগা প্রসঙ্গে লক্ষণীয় যে, যখন ভারত এ দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন এনএনসি-এর উদ্যোগে ১৯৫১ সালের মে মাসে নাগা জনপদে একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এ গণভোটের মাধ্যমে নাগা স্বাধীনতার পক্ষে সম্পূর্ণ সমর্থন প্রকাশিত হয়। এখনও নাগারা সেই গণরায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

    ভারতবর্ষ বৃটিশ শাসনে থাকলেও নাগারা প্রথম সভ্য জগতের খবর পেয়েছিল আমেরিকান-খৃস্টান মিশনারিদের কাছ থেকে। সেটা প্রায় দু'শ বছর আগের কথা। তারপর আলাদা অঙ্গরাজ্যরূপে ভারত ও পৃথিবীর বুকে নাগা অস্তিত্ব ঘোষিত হয়, নাগারা বিদ্রোহ করে সেটাও প্রায় ৪৫ বছর আগের ঘটনা। কিন্তু সাধারণ নাগারা এখনও তাদের চিরায়ত সমাজের কোটর ছেড়ে বেশি দূর এগিয়ে আসতে পারেনি। নাগারা নাগাল্যান্ডের বাইরে সহজে যেতে চায় না। বাইরের মানুষকেও সহজে গ্রহণ করতে চায় না। অতীতে এমনও দেখা গেছে যে, সর্বভারতীয় চাকরিতে (যেমন রেল, ডাক ও তার, আয়কর, জীবনবীমা ইত্যাদি) নিযুক্ত কোন নাগা নাগরিক নাগাল্যান্ডের বাইরে বদলি হলে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। ভারতের বা বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বাঙালি, শিখ, গুজরাতি, তামিল, মারাঠিদের যেভাবে বসতি গড়ে তুলতে দেখা যায়-নাগা বা উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতবোন রাজ্যগুলোর কোন জনগোষ্ঠীর নাগরিকদের সেই তুলনায় দশমিক ভাগও সক্রিয় দেখা যায় না।

    ইতিহাসও নাগাদের জন্য এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছে। মানুষের মাথা শিকার করার বিশেষণটা যে নাগাদের পেছন ছাড়ছে না তারও একটি ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। নাগারা অর্ধশতাব্দী আগেও মানুষের মাথা শিকার করত এবং বীরত্ব প্রদর্শনের নিদর্শনস্বরূপ ‘ট্রফি' হিসাবে সেগুলোকে তাদের বসত-ঘরে টাঙিয়ে রাখত। এই বীরত্বব্যঞ্জক মস্তক শিকার এমন ব্যাপক ও ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, প্রতিটি গ্রাম বাধ্য হয়েছিল নিশ্চিদ্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। খাড়া পর্বতশৃঙ্গে বসতি গড়ে, সেই বসতির চারপাশে উঁচু উঁচু পাথর সাজিয়ে প্রাচীর তুলে, সমস্ত লোকের আসা-যাওয়ার একটি মাত্র দরজা বানিয়ে, প্রতিটি গ্রাম হয়ে উঠেছিল এক-একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ। আর তার থেকেই জন্ম নিয়েছিল বিচ্ছিন্নতা। নাগারা মূলত একটাই উপজাতি এবং একই ভাষাগোষ্ঠীর লোক হওয়া সত্ত্বেও এই গ্রামবিচ্ছিন্নতার জন্যই বর্তমানে ৩০/৩৫টি উপজাতি এবং ভাষাগোষ্ঠীতে বিভক্ত। বিচ্ছিন্নতা এমনই স্তরে পৌঁছে গেছে যে, এক উপজাতি আরেক উপজাতির ভাষা পর্যন্ত বোঝে না। নাগাল্যান্ডের সরকারি ভাষা ইংরেজি। হিন্দি নয় ইংরেজি শেখাতেই সিংহভাগ নাগাদের আগ্রহ। হিন্দিশিখতে চাওয়া নাগার সংখ্যা নগণ্য-মুষ্টিমেয়-আঙুলে গোনা যায়।

    ভারতের আসামের উত্তর কাছাড় জেলার সদর শহর হাফলং থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে জাটিঙ্গা অবস্থিত। আসামে শিলং পাহাড়ের পর শুরু হয় হাফলং পাহাড়ের সারি। স্থানীয় দিমাশি ভাষায় হাফলং শব্দের অর্থ হলো 'উইপোকার তৈরি করা ছোট পাহাড়'। তবে জাটিঙ্গা শব্দটি দিমাশি ভাষার নয়, শব্দটি জেমে-নাগা উপজাতির।

    পৃথিবীর শোণিত সৌরভে চির ইতিহাস হয়েই রয়ে যায় এক বিপন্ন বিস্ময়। একদা কিছু নাগা পরিবার জুম চাষের জন্য জাটিঙ্গা আসে। একদিন তারা বুনো প্রাণীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুন জ্বালালে দেখতে পায় আগুন লক্ষ্য করে ঝাঁক বেঁধে নেমে আসছে একই জাতের পাখি। তখন ওরা ভেবেছিল এটা শয়তানের কাজ। পর পর কয়েক রাত এ ঘটনার পুনরাবৃতি হলে নাগারা সেখান থেকে চলে যায়। আসামের জাটিঙ্গা গ্রামে প্রতি বছর আগস্ট থেকে অক্টেবর এর মাঝে ঘনঘোর অন্ধকারের রাতে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে ঝির ঝির বৃষ্টি এবং কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় যখন বাতাস বয়ে চলে দক্ষিন পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্ব দিকে তাপমাত্রা বিশ ডিগ্রী থেকে পঁচিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস আদ্রতার পরিমান আসি থেকে নব্বই শতাংশ তখনই পাখিদের স্বেচ্ছামৃত্যু ঘটে। যদি কোন খোলা জায়গায় আগুন জলতে থাকে তাহলে সেখানে ঝাঁপিয়ে পরে ঝাঁকে ঝাঁকে। বিষয়টি যেন জাটিঙ্গার ঘন বন এবং পাহাড়ি ঝরনার মতই রহস্যাবৃত। এর কারন হতে পারে বিশেষ পরিবেশের যা সহজে অনুভব করা যায় না। বিজ্ঞানীদের মতে, বর্ষাকালে বৃষ্টির ফলে মাটির নীচে পানি জমে বলে চৌম্বক শক্তি জনিত হেরফেরের জন্য পাখির মাঝে অজ্ঞাত স্বেচ্ছামৃত্যুর স্পৃহা জন্মে।

    জেমে-নাগা উপজাতিরা জাটিঙ্গা এলাকায় এখন আর বাস করে না। কারণ তাদের ধারণা জায়গাটা অস্বাস্থ্যকর। জাটিঙ্গায় বর্তমানে বাস করে জৈন্তা উপজাতির লোকেরা। পাখিদের এই আত্মাহুতির বিষয়টিকে তারা ঈশ্বরের দান বলে মনে করে।আসাম পর্যটন দপ্তর জাটিঙ্গায় একটি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করেছে, যেটাতে উঠে রাতের বেলা পাখিদের আত্মহত্যা দেখা যায়। সারা বিশ্বের বহু পাখি বিশারদ জাটিঙ্গায় গিয়ে এই রহস্যময় ঘটনা পর্যবেক্ষণও করে এসেছেন। অনেকে অনেক রকম ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। কিন্তু কোনোটিই সুস্পষ্ট নয় বলে রহস্য রহস্যই থেকে গেছে।

    আসলে গ্রামটিতে পাখিরা আত্মহত্যা করে না বলে বলা উচিত তারা গ্রামবাসীর হাতে মারা পড়ে। বছরের এই সময়টাতে গ্রামবাসী নানা জাতের পাখির মাংসে ভূরিভোজ করে থাকে। আগস্ট থেকে নভেম্বর অর্থাত্‍ শরত্‍ ও হেমন্ত ঋতুতে রাতের বেলা গ্রামবাসীরা দলে দলে বেরিয়ে পড়ে। তাদের হাতে থাকে জ্বলন্ত মশাল, লণ্ঠন। বাঁশের লম্বা খুঁটি সাহায্যে মশাল বা লণ্ঠন উঁচিয়ে ধরে তারা আত্মহত্যাকারী পাখিদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এই আলো লক্ষ্য করে কোথা থেকে যেন ঝাঁকে ঝাঁকে নানা জাতের পাখি এসে পড়তে থাকে। মাটিতে পড়ার পর পাখিগুলো আর ওড়ার চেষ্টা করে না। মাটিতে পড়ে থাকা পাখিগুলোকে গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরে ফেলে এবং রান্না করে খায়। অনেকে পাখিগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু লাভ হয়নি। মাটিতে পড়া পাখিগুলোকে কেমন জুবুথুবু, ভীত দেখায়। কিছু খেতে দিলেও খায় না, দিনের পর দিন অভুক্ত থেকে পাখিগুলো অনাহারে মরে যায়। ভারতের প্রাণিবিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন গবেষণা করেও এ ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে সক্ষম হননি। ফলে জাটিঙ্গা আজও রহস্যে ঢাকা, পাখিদের আত্মহত্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি বার্ষিক আশ্চর্যজনক ঘটনা।

    ‘হেড-হান্টিং' নাগা সমাজব্যবস্থায় এবং নাগা জনজীবনে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নিছক খেলাচ্ছলেও মস্তক শিকারে এরা দ্বিধা করতো না। দুই গ্রামের মধ্যবর্তী জঙ্গলের মধ্যে কোনও একটি জলাশয় সংলগ্ন-পার্শ্ববর্তী গ্রামের কেউ মাছ ধরতে এলে হয়তো অপর গ্রামের কেউ পেছন থেকে আক্রমণ করে তার মাথাটাই কেটে নিয়ে দৌড়ে চলে আসত। হতভাগ্য মৎস্য শিকারীর দেহ পড়ে থাকত জলাশয়ের ধারে আর কর্তিত মস্তক চলে যেত হত্যাকারী নাগা যুবকের ঘরে-শোভাবর্ধক ও বীরত্বব্যঞ্জক সুভেনির হিসাবে। মস্তক শিকারের এই অভ্যাস নাগারা পেছনে ফেলে এসেছে বহুকাল। কিন্তু অপবাদ ও দুর্নাম তাদের পিছু ছাড়েনি এখনও। তার একটি কারণ হলো শিক্ষিত শ্রেণীর উদ্যোগের অভাব।

    নাগাদের অতীত নিয়ে কথা বললেই যেমন চলে আসে কর্তিত মস্তকের কথা তেমনিভাবে এদের বর্তমান নিয়ে কথা বললেই এসে যায় বিদ্রোহ, সন্ত্রাস, ইন্সার্জেন্সির কথা। আর সেই ইন্সার্জেন্সির পটভূমিকাতেও নাগাদের চিত্রিত করা হয় ভয়ঙ্কর হিংস্র মানব শ্রেণী রূপে। এরও কারণ রয়েছে। কাশ্মীর-পাঞ্জাব থেকে আসাম-মেঘালয় পর্যন্ত সর্বত্রই নিরস্ত্র জনগণের ওপর ফৌজি আক্রমণের প্রতিরোধস্বরূপ একমাত্র নাগা জনগোষ্ঠীই ভারতীয় সেনাবাহিনী বা আইন রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্মম জবাব দিতে পেরেছে। কাশ্মীরের রাজপথে বা পাঞ্জাবের শহরগুলোতে ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং জনগণের ওপর সেনা হামলার প্রতিবাদে যখন কেবল মিছিল বা ইট-পাটকেলের ঘটনা ঘটছে তখন নাগারা তাদের দেশে এসে আক্রমণরত ভারতীয় সেনা বাহিনীর সদস্যদের ধরে নিয়ে গিয়ে কুচি কুচি করে কেটে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।

    অতি-আধুনিকতার জন্য ভারতের সবচেয়ে বেশি এইডস রোগীর বাস নাগাল্যান্ডে।নাগাদের একটি নতুন প্রজন্ম যারা শিকড় ছেড়ে সমতলীয় সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করছে এবং নাগা সভ্যতা ও সংস্কৃতি বর্তমানে এভাবে ভারতের সমতলীয় আগ্রাসনের মুখে ধ্বংসোন্মুখ। ক্রমেই নানা অভ্যন্তরীণ প্রচলিত মূল্যবোধ বিলীয়মান হয়ে যাচ্ছে নাগা জীবন ও সমাজ থেকে।

    নাগা সমাজ যত গ্রামবিচ্ছিন্ন ও নগরকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে ততই ক্ষয়ে যাচ্ছে পুরাতন বহু মূল্যবোধ। হাল আমলে নগরসমাজের ওপর গ্রাম-পঞ্চায়েতের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকছে না। নগর-শহরে জন্মানো এবং সেখানেই বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের দায় থাকছে না কোনও সামাজিক কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করার। শহরে আইনশৃক্মখলা রক্ষার দায়িত্বে আছে পুলিশ এবং প্রশাসন। নতুন প্রজন্ম জানে তাদের কীভাবে প্রভাবিত করা যায়। তাই পুলিশ-প্রশাসনকে কাঁচকলা দেখিয়ে এবং সনাতন সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে নতুন প্রজন্ম ভাঙছে নাগা ট্র্যাডিশন। যদিও একদল এখনও ছুটছে স্বাধীনতার রক্তাক্ত আন্দোলনে। এদের দ্বারাই নির্ধারিত হবে নাগা সংস্কৃতির নতুন বিন্যাস। আর হেড-হান্টার বা পার্বত্য বিপ্লবী নাগাদের সম্পর্কে নতুন সংজ্ঞাটিও ঠিক করে দেবে এই অগ্রসর নতুন নাগা প্রজন্মই।

    ব্যাপকভাবে নাগারা যখন অবগুণ্ঠন ছেড়ে নাগাল্যান্ডের বাইরে যাওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে পারবে-তখনই তারা একটি জাতীয় চারিত্র প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। নচেৎ এই নিভৃতচারী জনগোষ্ঠী পৃথিবীর মানুষের কাছে থেকে যাবে অজানা ও রহস্যময় হেড-হান্টার। কিংবা সশস্ত্র বিপ্লববাদের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের রহস্যময় পার্বত্য যোদ্ধা। �

    নাগাল্যান্ডের যে জায়গাগুলো ঘুরবেন :-


     জুকৌ উপত্যকা :-

    জুকৌ বা নাগাল্যান্ডের জুকৌ উপত্যকা ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত একটি চিত্রানুগ অঞ্চল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪৩৮ মিটার বা ৭৯৯৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সুন্দর উপত্যকা রাজ্যের রাজধানী কোহিমা থেকে দক্ষিণে ৩০ কিমি দূরে অবস্থিত। উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুলের একটি গুপ্তধন জুকৌ, একে অনেকেই ভালবেসে ফুলের উপত্যকা বলে অভিহিত করেছেন। এই শৈল শহরের বিস্ময়কর প্রাকৃতিক কাব্য বর্ষাকালে একটি চিত্তাকর্ষক দৃশ্য প্রদান করে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস নিঃসন্দেহে জুকৌ উপত্যকা পরিদর্শনের সেরা সময়।
    জুকৌ ভ্যালী
    জুকৌ ভ্যালী নাগাল্যান্ড ইন্ডিয়া


    জুকৌ উপত্যকার পাহাড়ি আঁকা বাঁকা পথ ট্রেকারদের একটি স্বর্গোদ্যান। রডোডেনড্রন, ইউফোরবিয়া, অ্যাকোনিটাম এবং লিলি গ্রীষ্মের প্রারম্ভে জুকৌ ভ্যালিকে রঙে ভরিয়ে তোলে। বন্য ফুলের স্পন্দনশীল রং এই সম্মোহিত উপত্যকাকে একটি স্বর্গীয় চেহারা প্রদান করে।

    জুকৌ উপত্যকা কোহিমা থেকে ৩০ কিমি দূরে অবস্হিত।৭৯৯৮ ফুট উচ্চতার জুকৌ ট্রেকিং এর জন্য আদর্শ।রাতে জুকৌতে আপনি টেন্ট করে থাকতে পারবেন।সেক্ষেত্রে টেন্ট এবং খাওয়ার ব্যবস্হা আপনাকে করতে হবে।

    চাংতংগ্যা :-

    এই ছোট শহর চাংতংগ্যা নাগাল্যান্ডের মোককচং জেলায় অবস্থিত। এই অঞ্চলে কোন-শিকারের অঞ্চল সংরক্ষিত অরণ্য না থাকায় এটি পাখিদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল।বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী ফ্যালকন মঙ্গোলিয়া জার্মানি থেকে চাংতংগ্যা বনাঞ্চলে উড়ে আসে।এছাড়াও চুচুয়িমলাং এবং পঙ্গো গ্রাম আকর্ষণীয় স্হান।

    ফকিম অভয়ারণ্য :-

    নাগাল্যান্ডের ফকিম অভয়ারণ্য মায়ানমার সীমান্তের খুব নিকটে অবস্থিত। এটি নাগাল্যান্ড রাজ্যের পাংগ্রো অঞ্চলের সদর দপ্তরের আওতায় পরে। এই অভয়ারণ্য ৬৪২ হেক্টর জমির অন্তর্ভুক্ত।

    ফকিম অভয়ারণ্য বিপুল সংখ্যক উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুলের আবাস্থল। উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুলের কিছু বিরল প্রজাতি এখানে দেখা যায়। এই অভয়ারণ্যের কিছু প্রধান আকর্ষণ হল – বাঘ, স্লেন্ডার লোরি, উল্লুক, চিতাবাঘ, বন্য শূকর, হিমালয়ান ভল্লুক, জংলী বিড়াল, বুনো মোষ, সাম্বর, খেঁক হরিণ ইত্যাদি। এখানে উপলব্ধ কিছু বিরল প্রজাতির পাখি হল – ভারতীয় হর্ন বিল, ট্রাগোপান ফিসান্ট, ধূসর ফিসান্ট, জংলী ফাউল, সবুজ পায়রা, ঘুঘু ইত্যাদি।

    ইন্টাকি অভয়ারণ্য :-

    উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যাণ্ডের ইন্টাকি অভয়ারণ্য বিভিন্ন ধরণের পশুপাখিদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এটি ডিমাপুর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে এবং নাগাল্যাণ্ডের রাজধানী শহর কোহিমা থেকে ১১১ কিলোমিটার ।এই অঞ্চলের ভূদৃশ্য পাহাড়-পর্বত দ্বারা সুসজ্জিত।এই অভয়ারণ্যের পারিপার্শ্বিক অত্যন্ত সুন্দর এবং এটা পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত এবং সবুজ বনাঞ্চল দ্বারা আচ্ছাদিত।
    জুকৌ ভ্যালী নাগাল্যান্ড
    জুকৌ ভ্যালী

    ইন্টাকি অভয়ারণ্য বন্যপ্রাণী বন বিভাগ দ্বারা সংরক্ষিত। এই অভয়ারণ্য কিছু বিরল প্রজাতির পশুপাখির আশ্রয়স্থল। এই অভয়ারণ্য উদ্ভিদকুল ও প্রাণিকুলের বৈচিত্রপূর্ণ সম্পদ দ্বারা সমৃদ্ধ।

    ইন্টাকি অভয়ারণ্যের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল উল্লুক যা শুধুমাত্র ভারতেই পাওয়া যায়। এই অভয়ারণ্যে উপলব্ধ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী হল – আলস্য ভালুক, হাতি, বাঘ, মিথুন, সাম্বর, গড়াল, উড়ুক্কু কাঠবিড়াল, খেঁক হরিণ, বন্য কুকুর ইত্যাদি। এছাড়াও এই অভয়ারণ্য বিরল প্রজাতির পক্ষীদের বৃহৎ সংগ্রহের জন্য সুপরিচিত। এখানে উপলব্ধ কয়েকটি পক্ষী হল – কালিজ , সাধারণ ফিসান্ট, হর্ন বিল, কালো সারস ইত্যাদি।

    জাপফু চূড়া :-

    জাপফু চূড়া উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের একটি সবুজ গন্তব্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড় ৩০৪৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত, এই শৈল শহর ঘন বাঁশ ঝোপ দ্বারা আচ্ছাদিত যা একটি লনের স্বরুপ দেখায়। জাপফুশিখর পর্যন্ত ট্রেক বেশ শক্ত।এই চূড়া কোহিমার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ যা নাগাল্যান্ডের রাজধানী শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই পর্বত চূড়া থেকে কোহিমা শহরের একটি সমগ্র ঝলক দেখা যায়।

    জাপফু চূড়া নাগাল্যান্ডের আকর্ষণের মধ্যে সেরা হিসাবে গণ্য হয় এবং এই চূড়া থেকে রহস্যময় সূর্যোদয় দর্শন একটি অবিস্মরণীয় দৃশ্য।

    উত্তর পার্বত্য আর্দ্র শীতপ্রধান বন জাপফুর ভূদৃশ্যকে মিকেলিয়া, ম্যাগনলিয়া, কুয়েরকাস, প্রুনাস, অ্যালনাস, কিমা এবং বেতুলা ইত্যাদি চিরহরিৎ উদ্ভিদ দ্বারা ভরিয়ে তোলে। গ্রীষ্মের আগমনের সাথে সাথে নাগাল্যান্ডের জাপফু চূড়ায় রডোডেনড্রন ফুলের রঙিন সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রসঙ্গক্রমে, বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা রডোডেনড্রন গাছ জাপফু চূড়ায় পাওয়া গেছে যার উচ্চতা ১৩০ ফুট এবং পরিধি প্রায় ১১ ফুট। তার দ্রুত প্রসারের জন্য এই বৃক্ষের নাম গিনেস বুক বিশ্ব রেকর্ডে স্থান অর্জন করেছে।

    খোনোমা গেট :-

     
    সেমোমা ফোর্ট খোনোমা গেট
    সেমোমা ফোর্ট খোনোমা গেট
    খোনোমা গেট নাগাল্যান্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ। খোনোমা গেট এই অঞ্চলের নাগা উপজাতিদের গ্রামে ব্রিটিশদের অনুপ্রবেশের কাহিনীকে তুলে ধরে। নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার স্বল্প দূরত্বে অবস্থিত, এই ক্ষুদ্র গ্রাম খোনোমা এই রাজ্যের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং প্রথাগত উত্তরাধিকারের প্রত্নসম্পদকে বহন করে।
    খোনেমা নাগাল্যান্ড
    খোনেমা নাগাল্যান্ড

    প্রাচীন কালে খোনোমা গ্রামের স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা গ্রামে ইংরেজদের নিয়মিত আক্রমনের হাত থেকে তাদের প্রতিবেশী গ্রামগুলিকে সুরক্ষিত করার জন্যে দরজা নির্মাণ করেছিলেন। তাদের সাহসিকতার জন্য সুপরিচিত খোনোমা গ্রামের স্থানীয় গ্রামবাসীরা প্রায়শই তাদের জীবন ও সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য এই অনুপ্রবেশকারীদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হত।

    ষুদ্র গ্রাম খোনোমা কুড়িটি ভিন্নধর্মী ধান উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত যা নাগাল্যান্ডের স্থানীয় আদিবাসী বাসিন্দাদের প্রচলিত খাদ্য।

    মেলুরি :-

    মেলুরি নাটুকে সৌন্দর্য সবুজ পাহাড় এবং ছোট, আঁকাবাঁকা নদী দ্বারা প্রভাবিত হয়। সিল্লোই হ্রদ একটি জনপ্রিয় পর্যটক আকর্ষণ, যা মেলুরির অত্যন্ত নিকটে অবস্থিত এবং জিপ বা বাসের মাধ্যমে সহজেই ভ্রমণযোগ্য।

    মেলুরি শহর সুবিশাল প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ দ্বারা সমৃদ্ধ যথা – আলঙ্করিক পাথর, কয়লা, ম্যাগনেসাইট, ব্রাইন, মলিবডেনাম, মার্বেল, লৌহ ক্রোমিয়াম, নিকেল, কোবাল্ট, তামা, ক্রোমিয়াম, অ্যাসবেসটস, স্ফটিক চুনাপাথর এবং অভ্র ইত্যাদি। বর্তমানে, নাগাল্যান্ডের একমাত্র সিমেন্ট কারখানা মেলুরি ব্লকের উইজিহোতে অবস্থিত। সম্প্রতি এক আলংকারিক পাথর কারখানা উইজিহোতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    মেলুরিতে একটি সুপরিকল্পিত সড়ক সংযোগ রয়েছে। পর্যটকরা মেলুরি থেকে ফেক এবং নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমা যাওয়ার বাস ও ট্যাক্সি পেতে পারেন।

    নাগাল্যান্ড মিউজিয়াম :-

    নাগাল্যান্ডের মিউজিয়ামগুলি এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে সংরক্ষিত করার তাগিদে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে। এখানে বিভিন্ন ধরনের মিউজিয়াম রয়েছে যেমন – চারুকলা, ইতিহাস, শিল্প, জাতিবিদ্যা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিশুদের মিউজিয়াম ইত্যাদি। কিন্তু নাগাল্যান্ড মিউজিয়াম জাতিবিদ্যার বিষয়শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

    নাগাল্যান্ড ১৬-টি প্রধান উপজাতি দ্বারা অধ্যুষিত। নাগাল্যান্ডে বসবাসকারী কিছু উপজাতি হল – কুকি, কাছারি, চ্যাং, অঙ্গমি, আওস, সুমিস, কোনিয়াক, চাখিসাং, লোথা, পচুরি ইত্যাদি। এই সব উপজাতিদের অনন্য সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রীতিনীতি, পোশাক ইত্যাদি নাগাল্যান্ডের মিউজিয়ামে প্রদর্শিত

    নাগানিমোরা :-

    এই শহরটির নাম উদ্ভূত হয়েছে নাগা রানী মোরা শব্দটি থেকে যার অর্থ হল নাগা রাণীর কবরস্থান। কোনিয়াক কিংবদন্তি অনুযায়ী ওয়াটলং কোনিয়াক ছিলেন কোনিয়াকের এক নাগা রানী যিনি অহোমের একজন রাজাকে বিবাহ করেন। তিনি লাখানে মারা যান এবং অহম রাজা এই জায়গার নাম পরিবর্তন করে নাগানিমোরা হিসাবে নামকরণ করেন। নাগানিমোরা শহর, নাগাল্যান্ডের মন জেলার অন্তর্গত কোনগাঁও গ্রাম থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই শহর পূর্বে লাখান নামে পরিচিত ছিল।

    নাগানিমোরা শহর মন জেলার একটি মহকুমা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দ্বারা পরিচালিত। দিখু নদীর তীরে এটি একটি ক্ষুদ্র এবং নাটুকে শহর। এই শহর প্রধানত কোনিয়াক নাগাদের দ্বারা অধ্যুষিত যারা ধাতব শিল্পে নাগাদের মধ্যে সবচেয়ে পারদর্শী বলে বিবেচিত। পর্যটকরা এখানে আসে এই শহরের নাটুকে সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং কোনিয়াক নাগাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে কাছ থেকে পরিদর্শন করতে।

    পুলি ব্যাজ অভয়ারণ্য :-


    পুলি ব্যাজ অভয়ারণ্য নাগাল্যান্ডের একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।পুলি ব্যাজ অভয়ারণ্য রাজধানী শহর কোহিমার নিকটে অবস্থিত যা ভ্রমণকারীদের জন্য সহজগম্য। বন বিভাগ এই অভয়ারণ্যকে যে কোন ধরণের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। এই অভয়ারণ্য বিভিন্ন ধরণের পাখির বৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। বিরল প্রজাতির পাখি ব্লিথ ট্র্যাগোপান এবং হোয়াইট-নেপড্ যুহিনা এখানে দেখা যায়।

    নাগাল্যাণ্ড রাষ্ট্রীয় মিউজিয়াম :-

    নাগাল্যাণ্ড রাষ্ট্রীয় মিউজিয়াম নাগাল্যাণ্ডের রাজধানী শহর কোহিমায় অবস্থিত। এটি এই শহরের উত্তরে প্রায় ১ থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই মিউজিয়ামের অমূল্য ভান্ডার নাগাল্যান্ড রাজ্যের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে চিত্রিত করে। নাগাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার জন্য এটি সেরা জায়গা। নাগাল্যাণ্ড রাষ্ট্রীয় মিউজিয়াম রাজধানী শহর কোহিমায় অবস্থিত হওয়ায় সহজেই প্রবেশযোগ্য যা কিছু কিছু প্রধান শহর গুলির সাথে সুসংযুক্ত।

    এই মিউজিয়ামে প্রদর্শিত কিছু নিদর্শন হল – স্তম্ভ, গেটপোস্ট, গহনা, ভাস্কর্য ইত্যাদি। মিউজিয়ামের একটি পৃথক কোণে যুদ্ধের নৌকোর অনুরূপ একটি আনুষ্ঠানিক ঢাক প্রদর্শিত হয়। এই জলযান এটা ইঙ্গিত করে যে নাগারা সুমাত্রা থেকে নাগাল্যাণ্ডে স্থানান্তরিত হয়েছে।


    নাগাল্যাণ্ড রাষ্ট্রীয় মিউজিয়াম এই রাজ্যের বসবাসকারী প্রতিটি উপজাতির জীবনধারার একটি বিস্তারিত পরিদৃশ্য প্রদান করে। এই রাষ্ট্রীয় মিউজিয়াম নাগাদের সামাজিক স্তরায়ন, স্থাপত্য, সংস্কৃতি, পরিচ্ছদ এবং রীতিনীতি তুলে ধরে। মিউজিয়ামের বেসমেন্টে উত্তর-পূর্ব পাহাড়ি এলাকায় উপলব্ধ পাখি এবং প্রাণীদের দেখা যায়।

    তুলি শহর :-

    তুলি শহর ভারতে নাগাল্যান্ডের মোককচং জেলায় অবস্থিত।এই সুন্দর শহর তুলি মেলাক নদীর ডান তীরে অবস্থিত। মেলাক সমভূমির উপরে রি লাংপাংকং পরিসীমা তুলি শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও প্রভাবিত করে।

    নাগাল্যান্ডের যে হোটেল গুলোতে থাকতে পারেন :-

    1. হোটেল জাপফু
    2. হোটেল পাইন
    3. হোটেল ক্যাপিটাল
    4. হোটেল শ্যারন

    আসুন ভ্রমনে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকি।জুকৌ ট্রেকে পাহাড়ের গায়ে গায়ে ছোট ছোট ময়লা ফেলার বাস্কেট ঝুলানো আছে।



    প্রিয় সুহৃদ , জুকৌ ভ্যালী বা  জুকৌ উপত্যকা,  নাগাল্যান্ড নিয়ে আপনাদের কোন পরামর্শ বা অভিজ্ঞতা থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করুন কমেন্ট বক্সে।  ভালো লাগলে শেয়ার ও কমেন্ট করে সবাই কে জানার সুযোগ করে দেবেন।

No comments:

Post a Comment